ওপার বাংলার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা মাকে হারিয়েছেন। প্রিয়জনের এমন আকস্মিক বিয়োগে শোকে মুহ্যমান তিনি। মাকে হারানোর পর তার ভেতরের কষ্ট, শূন্যতা এবং গভীর বিষাদের কথা তিনি তুলে ধরেছেন এক আবেগঘন চিঠিতে।
ঋতুপর্ণা বলেন, এখনও তো অত বড় হইনি! তুমি চলে গেলে যে? এখনও তো আদর খেতে ইচ্ছে হয় আমার। কত দিন তুমি বকোনি আমায়। কত দিন তুমি ফোনের ওপারের সেই অভিমানী মা কোথায় হারিয়ে গেল আমার। বলো না, আমায় এভাবে রেখে চলে গেলে কেন? শূন্য হয়ে গেল সব।
কেউ বোঝে না আমায়, তোমার মতো। প্রতি রাতে কান্না পায়। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে কিন্তু কাউকে বুঝতে দিই না। তুমি কি অভিমান করে এভাবে চলে গেলে? খুব একা লাগে এখন। অনেক না-বলা কথা রয়ে গেল। তোমার প্রিয় বারান্দা আছে ওখানে। যেখান থেকে একফালি আকাশ দেখা যায়।
মায়ের সঙ্গে কাটানো ছোট ছোট মুহূর্তগুলো তাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, কতটা একা তিনি এখন। ঋতুপর্ণা তার প্রিয় লেখকের বইয়ের কথা উল্লেখ করে মাকে জিজ্ঞাসা করছেন, প্রিয় লেখক সমরেশ মজুমদার, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের বইগুলো ওখানে খুঁজে পেয়েছ তো? পরলোক কেমন মা? রাস্তাগুলো সুন্দর?
ঋতুপর্ণা তার মাকে স্মরণ করে আরও লেখেন, জীবনে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছো। কিন্তু আমাদের গায়ে আঁচ লাগতে দাওনি। সব একা সামলেছো।
তার কথায়, সব বাধ্যবাধকতা ছাড়িয়ে তুমি চলে গেলে! রাতের তারাদের মধ্যে তোমার ঠিকানা খুঁজি। যেখানে আমার এই চিঠি পৌঁছোবে। তোমার ঠিকানাটা আমাকে বলবে! তোমার কাছে যাব। তোমার আদর খেতে চাই। এখনও মনে পড়ে, তুমি আমার বাড়ির কার্নিশের পাখির বাসাটা বার বার দেখতে। পাখির ছানাগুলো কী করছে খেয়াল রাখতে।
শেষে লিখেছেন, শেষ মুহূর্তে আমার সঙ্গে কোনও কথাই তুমি বললে না। এখন তোমার ওই অপেক্ষার কথা খুব মনে পড়ে। কখন আমি আসব, সেই অপেক্ষা। আর হয়তো এই অনুভূতি হবে না কখনও। তুমি আমাদের ছাড়া ওখানে কেমন আছো? আমি একদম ভাল নেই। তুমি জেগে আছো তো! আমি আসছি।
খুলনা গেজেট/এএজে